সোমবার (১৬ মে) থেকে লিটার ১১০ টাকা করে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করার ঘোষণা দিলেও হঠাৎ করে তা স্থগিত করেছে টিসিবি। ন্যায্যমূল্যে তেল ও পণ্য বিক্রির এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে বলে রোববার (১৫ মে) রাত সাড়ে ৯টায় এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় সংস্থাটি। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে টিসিবি জানায়, বিক্রয় কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা এবং প্রকৃত সুবিধাভোগীর কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সরকার নীতিগতভাবে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য (ভোজ্য তেল, মসুর ডাল, চিনি) বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ঢাকা (উত্তর ও দক্ষিণ) ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ফ্যামিলি কার্ড প্রণয়ন ও বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর কেবল ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমেই টিসিবির পণ্য সামগ্রীর বিক্রয় কার্যক্রম চলবে। অব্যাহত থাকবে। তাই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য চলতি মাসের ১৬ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত স্বল্প পরিসরে সাধারণ ট্রাকসেল কার্যক্রম স্থগিত করা হল। আগামী জুন মাসে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে এক কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের নিকট টিসিবি কর্তৃক ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য (ভোজ্য তেল, মশুর ডাল, চিনি) বিক্রয় করা হবে।
এর আগে গত ১১ মে টিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ১৬ মে থেকে কম মূল্যে তেল ও অন্যান্য পণ্য বিক্রি করা হবে। তখন বলা হয়, বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে সাশ্রয়ী ও ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি। এজন্য সারা দেশের সব মহানগরী, জেলা ও উপজেলায় ২৫০-৩০০টি খোলা ট্রাকের মাধ্যমে আগামী ১৬ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত বিক্রি কার্যক্রম চলবে।
ট্রাক থেকে একজন ক্রেতা ৫৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ দুই কেজি চিনি, ৬৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ দুই কেজি মসুর ডাল, ১১০ টাকা দরে ২ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারবেন। এছাড়া গত মাসের অবশিষ্ট ছোলা ৫০ টাকা কেজি দরে ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল টিসিবি।
প্রসঙ্গত, রোজার ঈদের আগে হঠাৎ করে বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট দেখা দেয়। ঈদের আগের রাতেও অনেক ক্রেতা বাজারে গিয়ে তেল না পেয়ে ফিরে আসেন। এ নিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে গত ৫ মে দাম বাড়ানো হয় সয়াবিন ও পাম অয়েলের। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন ১৯৮ টাকা ও পাম সুপার ১৭২ টাকা নির্ধারণ করেন মিল মালিকরা।
উল্লেখ্য, গত চার বছরে যেসব ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে তার মধ্যে অন্যতম পাম অয়েল ও সয়াবিন তেল। ২০১৯ সালে দেশের বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ছিল ১০৪ টাকা। ২০২০ সালে সেটি বেড়ে হয় ১১৩ টাকা, ২০২১ সালে ১৩০ টাকা এবং ২০২২ সালের শুরুতে এসে হয় ১৬৮ থেকে ১৭০ টাকা। এখন হলো ১৯৮ টাকা।
পাম ওয়েলের লিটার (খোলা) ২০১৯ সালে ছিল ৫৮ টাকা, ২০২০ সালে ৭৮ টাকা, ২০২১ সালে ১০৭ টাকা এবং ২০২২ সালের শুরুতে হয় ১৫০ টাকা। এখন ১৭২ টাকা।